বেঙ্গল নেক্সট্: কলকাতা:
অবশেষে গ্রেফতার সন্দেশখালীর বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহান। উত্তর ২৪ পরগনার মিঁনাখার বামনপুকুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ন’টা নাগাদ মিঁনাখায় সাংবাদিক বৈঠক করেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার । সাংবাদিক বৈঠকে শাহজাহানের গ্রেফতারির কথা জানান তিনি।
এদিনই শাহজাহানকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় কার্যত গ্রীন করিডোর করে তাকে বসিরহাট থেকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার ভবানী ভবনে।
গত ৫ই জানুয়ারি শাহজাহান কিসসা শুরু হয় বাংলায়। রেশন কেলেঙ্কারির ঘটনায় সন্দেশখালিতে জ্যোতিপ্রিয় (বালু) ঘনিষ্ঠ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি অভিযানে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। প্রহৃত হন ইডি আধিকারিকেরা, কোনক্রমে পালিয়ে বাঁচেন তারা। অভিযোগ ওঠে শাহজাহান অনুগামীদের বিরুদ্ধে । এরপর সন্দেশখালি এলাকায় শাহজাহানের সাগরেদরা এলাকার বাসিন্দাদের উপর অত্যাচার শুরু করে বলে অভিযোগ সেই থেকেই উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। এলাকার মহিলারা পাল্টা ঝাঁটা লাঠি হাতে রাস্তায় বের হয়ে পড়েন। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় শাহজাহানের সাগরেদদের পোল্ট্রি ফার্ম, ভেড়ি তে। মহিলাদের পাল্টা ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সন্দেশখালি যায় কেন্দ্রীয় মহিলা কমিশন। যায় কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। সন্দেশখালী যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তার সামনে নিজেদের অভিযোগ জানানন মহিলারা। বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের পক্ষ থেকে সন্দেশখালি যাওয়ার প্রচেষ্টা হয়। এখান থেকেই এক শিখ ধর্মাবলম্বী আইপিএস আধিকারিক কে খালিস্থানি মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। অন্যদিকে শাহজাহানের সাগরেদদের একের পর এক গ্রেফতার করতে থাকে রাজ্যের পুলিশ। যদিও শাহজাহানের নাগাল তারা পাচ্ছিলেন না। রাজ্য পুলিশের দাবি ছিল, কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশের কারণেই তারা এই পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত শাহজাহানের গ্রেফতারি নিয়ে কোন বাধা না থাকার কথা বললে গ্রেফতার হলেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান।
শাহজাহানের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাকে। অন্যদিকে বিজেপির দাবি, তাদের চাপের কারণে গ্রেফতার হয়েছেন সন্দেশখালির ত্রাস। সিপিএম দাবি করেছে, জনতার চাপে গ্রেফতার শাহজাহান। শাহজাহানের গ্রেফতারির খবরে সন্দেশখালীর বিভিন্ন জায়গায় মহিলারা আবির খেলেছে, একে অপরকে মিষ্টিমুখ করিয়েছে। এখন সন্দেশখালি ঘিরে রাজনীতি কোন উচ্চতায় যায়, সেটাই দেখার।