বেঙ্গল নেক্সট্: রাজনৈতিক ঘর ওয়াপসি সপুত্র মুকুল রায়ের। শুক্রবারের বিকেলে ছেলে শুভ্রাংশুকে নিয়ে মুকুল যান তৃণমূল ভবনে। তার পরেই যোগ দেন পুরানো দলে। মুকুলের ঘরওয়াপসিতে খুশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপি র সর্বভারতীয় সহসভাপতি তথা বিধায়ক মুকুল রায় ও ছেলে শুভ্রাংশু এদিন তৃণমূল ভবনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে সবুজ শিবিরে যোগ দেন। উত্তরীয় পড়িয়ে দুজনকেই স্বাগত জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । মুকুল রায়ের খেদোক্তি, বিজেপিতে আর থাকতে পারলেন না তিনি, তাই পুরানো দলে ফেরা। অন্যদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্রোক্তি, বিজেপিতে কেউ থাকতে পারবেন না, মুকুলের শরীরটাও খারাপ হয়ে যাচ্ছিল বিজেপিতে থেকে, বিজেপিতে থাকা যায় না। যদিও মুকুল শুভ্রাংশু র দলত্যাগ নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি, দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, কে বিজেপি ছাড়লেন তা নিয়ে তার মাথাব্যথা নেই, মুকুল রায় কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এনিয়ে বলবেন, তিনি এখন বিজেপির ঘরছাড়া কর্মী সমর্থকদের পাশে থাকতে চান।
দলনেত্রীর সঙ্গে মনান্তরের জেরে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মুকুল। বিজেপিতে গিয়ে তৃণমূল ভাঙানোর খেলায় নামেন এই পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। তাঁর হাত ধরেই একের পর এক তৃণমূল নেতা হাতে তুলে নেন গেরুয়া নিশান। পরে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর গৈরিক শিবিরে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন মুকুল। অথচ গত লোকসভা নির্বাচনের আগে যখন মুকুল সক্রিয় ছিলেন, তার ফল বিজেপি পেয়েছিল হাতেনাতে। এ রাজ্যে দুই থেকে তাদের আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ১৮। ফলের যাবতীয় ক্রেডিট নিতে এর পরেই শুরু হয়ে যায় ‘ভিনদেশি’ মুকুলকে দলে কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া। এরও ফল বিজেপি পেয়ে গিয়েছে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে। ২৯২টি আসনের মধ্যে মাত্র ৭৭টি নিয়েই সন্তুষ্ট হতে হয়েছে অমিত শাহের দলকে।
এদিকে, মুকুল তৃণমূল ছাড়ায় সবুজ শিবিরে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু। নানা উপেক্ষা সয়েও দীর্ঘদিন মমতা-সঙ্গ ছাড়েননি বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক। শেষতক সহ্যের সীমা ছাড়ালে বিধানসভা নির্বাচনের কিছু আগে তিনিও যোগ দেন বিজেপিতে।
মুকুল এবং শুভ্রাংশুকে খুশি করতে দুজনকেই বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কৃষ্ণনগর উত্তরে মুকুল জিতলেও, বীজপুরে হেরে যান শুভ্রাংশু। তার পর থেকেই সপুত্র মুকুলের বিজেপি ছাড়ার জল্পনা জোরালো হতে থাকে। জল্পনায় ইন্ধন জোগায় দিন কয়েক আগে শুভ্রাংশুর একটি পোস্ট। এরপর অসুস্থ মুকুল জায়াকে হাসপাতালে অভিষেকের দেখতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে মুকুল শুভ্রাংশু র তৃণমূলে ফেরা হয়ে যায় সময়ের অপেক্ষা । অতঃপর শুক্রবার মুকুল ভিড়লেন তৃণমূলে। শেষ হয়ে গেল তাঁর প্রায় চার বছরের গেরুয়া-সঙ্গ।