বেঙ্গল নেক্সট্: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোটে হারিয়ে সাড়া ফেলে দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীকেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে বেছে নিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিরোধী দলনেতার পদে শুভেন্দুর নাম প্রস্তাব করেন মুকুল রায় স্বয়ং। সর্বসম্মতিক্রমে শুভেন্দু র নির্বাচিত হওয়ার কথা ঘোষণা করেন বিজেপির শীর্ষ নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ।
চলতি বিধানসভা নির্বাচনে দল ছেড়ে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারীকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হন খোদ তৃণমূল নেত্রী। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে জয়মাল্য পরেন শুভেন্দুই। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধরাশায়ী করায় বিপর্যয়ের মুখেও হাসি ফোটে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মুখে।
এর পরেই বিরোধী দলনেতা কে হবেন তা নিয়ে শুরু হয় নানা জল্পনা। অভিজ্ঞতায় এগিয়ে ছিলেন মুকুল রায়। তবে দক্ষ সংগঠক শুভেন্দুকেও ঠেলতে পারেননি গেরুয়া কর্তারা। আবার সংঘ ঘনিষ্ঠ মনোজ টিগ্গাও ছিলেন লাইনে। শেষমেশ তরুণ তুর্কি শুভেন্দুকেই বিরোধী দলনেতার পদে অভিষিক্ত করেন বিজেপি নেতারা। তাঁর নাম প্রস্তাব করেন মুকুল রায় স্বয়ং।
এখানেই উঠছে প্রশ্ন। কেন শুভেন্দুকে পাশ দিয়ে দিলেন মুকুল? ভোটে জেতার পরে মুখে হাসি না থাকায় মুকুল তৃণমূলে যাচ্ছেন বলে জল্পনা ছড়ায়। দিন দুয়েক আগে টুইট করে নিজেই সেই জল্পনায় জল ঢেলে দেন মুকুল। তার পরেও একটা কিন্তু থেকেই যায়। তা হল, বিধানসভায় তৃণমূল নেতার সঙ্গে মুকুলের সৌজন্য বিনিময় এবং ভোট-বাজারে মমতার মুকুল-স্তুতি।
তৃণমূল নেতারা সচরাচর এড়িয়েই যান বিরোধীদের। বিজেপির ছোঁয়াচও সেই যুক্তিতেই ইদানিং এড়িয়ে চলছেন তাঁরা। এমতাবস্থায় সুব্রত বক্সির সঙ্গে মুকুলের সৌজন্য বিনিময়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
ভোটের প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন শুভেন্দু। পুরানো দলের নেত্রী সম্পর্কে একটি কথাও কোনও জনসভায়ই বলেননি মুকুল। তার জেরে খোদ মমতার মুখে শোনা যায় মুকুল-প্রশস্তি। এই দুয়ের জেরেই মুকুলের পুরানো দলে ফেরা নিয়ে ফের ছড়ায় জল্পনা। মুকুল স্বয়ং সেই জল্পনায় ইতি টানলেও, আগামীতে জল কোনদিকে গড়ায় এখন সেটাই দেখার।